যে গল্পের নাম নেই !
সকাল ৯:৪৯!!! "ঐ তো ফারেনহাইট এসেছে!!"তো এখন বাড়ির কাজটা দে। শিহাবের কথাটা শুনে নাঈম বলে উঠলো,আমি ফারেনহাইট হইলাম কেম্নে?? যত্তসব। শিহাব, আচ্ছা এখন বাড়ির কাজটা দে। নাঈম,কি বাড়ির কাজ?? শিহাব,কী বলিস?লিখস নাই?! নাঈম,[মাথা চুলকাতে চুলকাতে] ডায়রি লিখি নাই। শিহাব,দুইটা পাঠ থেকে ২০ টা mcq দিছে। নাঈম,২০ টা!! নেও সাড়ছে।[বই খুলে বসে পড়ল।৩-৪টা লিখেছে এমন সময় কে যেন একজন প্রচন্ড এক ঘুষি দিয়ে উঠলো।] পেছনে ফিরে দেখে দুজন ঝগড়া লেগে গেছে।খাতা ছুড়ে ফেলে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে উল্টো ট্রান্সফার করে।যে ঘুষিটা খেলো। লাফিয়ে উঠলো।"আরে!! তুই মেরেছিস?? আমার বিশ্বাস হয় না।এতো অন্য জগতের বাসিন্দা!! নাঈম, মজা করছি না আমি। তুই আমাকে মেরেছিস তাই আমিও তোকে মেরেছি। এমন সময় ক্লাস টিচারের গলা শুনা গেল।"নাঈম, তোমার মাকে স্কুলে নিয়ে আসো।একটু প্রয়োজন আছে।" নাঈম তার মা যে স্কুলের শিক্ষক। সে স্কুলের দিকে এগিয়ে গেল। তাদের স্কুলের উল্টো দিকেই ঐ স্কুলটা।কি জানি হাবিজাবি বলল। তারপর তাকে সহ ছুটি দিয়ে দিল। যাওয়ার পথে কোনো কথা বলল না দুজনের কেউই।বাড়িতে গিয়েই মা রেগে গিয়ে চেঁচামেচি শুরু করলো। নাঈমের ভাই আজকে কলেজে যায়নি।সে এসে বলল,কি হয়েছে এরকম চেঁচামেচি কেন। মা, তোর ভাই কি করে এসেছে জিজ্ঞাসা কর।ম্যাম আমাকে বলেছেন, আমি নাকি ওর দিকে নজর দেইনা।ও স্কুলে উল্টাপাল্টা আচরণ করছে।আমাকে কি পরামর্শ দিয়েছে জানিস? ওকে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে যেতে। ভাইয়ার চোখ কপালে।"কি বলো এসব"!! মা,ওকে বলে দে, আগের মতো আচরণ করতে। এমনিতেই সারাদিন খেটে আমি টায়ার্ড থাকি। এরকম খবর কোনো মায়ের কাছেই সুখকর নয়।নাহলে আমি বাধ্য হবো সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে যেতে। ভাইয়া, তুমি যাও।আমি দেখছি।[নাঈমের মাথায় হাত বুলিয়ে] কী হয়েছে বলবি না আমাকে?? নাঈম,কি বলবো।আমি এরকম কেন করছি,নিজেও জানি না।সবাই বলছে আমি নাকি পাগলের মত বিহেভিয়ার করছি। ভাইয়া, তুই পাগল কিভাবে হলি!জানিস না আসল পাগল কোনোদিনই বলে না আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। নাঈম, সত্যিই তাই, ভাইয়া
? ভাইয়া, হুম।এখন চোখের পানি মুছে ফেল। ছেলেদের কান্না মানায় না। তুই তো আগে কোনোভাবেই কান্না করতি না।এখন করবি কেন? নাঈম, তুমি অনেক ভালো ভাইয়া। ভাইয়া, দাঁড়া। তুই কান্না থামিয়েছিস কিনা সেটা দেখে নেই। নাঈম,[ হতবাক হয়ে] কীভাবে দেখবে? ভাইয়া, আমার ম্যাগনিফাইং গ্লাসটা দিয়ে!! কিন্তু কোথায় রেখেছি মনে আসছে না!! ওটা বের করতে একজনকে দরকার। নাঈম,কাকে?
ভাইয়া,আমার ভাইটাকে।আর কাকে। সেই ভাইটাকে। যাকে বলার পর, একরাশ বিরক্তি নিয়ে কিছুক্ষণ চিল্লাচিল্লি করে তারপর খুজে বের করে দিবে। সেই ভাইটাকে ,যে না বলা সত্ত্বেও আমার গ্লু গানের মতো যন্ত্রপাতিতে হাত দেয়। সেই ভাইটিকে ,যে চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে।
নাঈম, হুম বুঝেছি। কিন্তু তুমি বুঝলা কিভাবে? আমি তোমার যন্ত্রপাতিতে হাত দেই?
ভাইয়া,বলমু না। এরজন্য আমাকে স্পেশাল চিপস খাওয়াতে হবে। আচ্ছা তোর জন্য একটা চ্যালেঞ্জ আছে। তোর পড়াশোনা পুরোদমে চালু কর।আমি তোর প্রতিদিনের পড়াশোনা দেখে নাম্বার দেবো। যদি ১৫ এর উপরে নাম্বার পেয়ে যাস। তাহলে ফেব্রুয়ারির বইমেলায় পাক্কা যেতে পারবি।তবে প্রত্যেক দিনের পড়ার উপর এক এক করে নাম্বার পাবি।
নাঈম, তুমি ইচ্ছা মতো নাম্বার দিবা?
ভাইয়া, হুম।
নাঈম, তাহলে তো যাচ্ছে তাই অবস্থা!! একবার মায়ের এক সেট খাতা দেখেছিলে মনে আছে? [ঐ খাতা এরকম ভাবে দেখেছিল।যে দাড়ি-কমার জন্যেও নাম্বার কেটেছিল] এভাবে দেখলে আমার অনেক দিন লাগবে। তবুও আমি এক্সেপ্ট করে নিলাম তোমার চ্যালেঞ্জ।
ভাইয়া,এই তো।আমি আজ সিলেট যাচ্ছি। আন্টিকে আনতে।
নাঈম,ওরে বাবা!! সিলেট তারমানে টর্নেডো আসছে!!!
ভাইয়া,(হাসতে হাসতে) হুম। তোমার জন্য টর্নেডোই।
নাঈম, আমার অনেক কাজ আজকে।[আন্টির ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে।এক মূহুর্তও শান্ত থাকে না। যত কৌতুহল আমার জিনিসের প্রতি। আজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা হলো। আমার প্রিয় জিনিসগুলো নিরাপদ দূরত্বে রাখা। আরেক বার আমার সাধের একটা জিনিস ভেঙ্গে ফেলেছিলো। খুব প্রিয় ছিল ঐ জিনিসটা।পরে সুপার গ্লু, গ্লু গান দিয়ে জোরা লাগানোর চেষ্টা করেছিলাম…
**** নাঈমের উৎফুল্ল ভাবটা দেখে তার ভাইয়া বলে উঠলো, সবসময় এরকমই থাকবি।আর কেউ না থাকুক আমি তোর পাশে আছি। নাঈম তার ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে বলল ভাইয়া তুমি অনেক ভালো।****
গল্প লেখার জন্য কিছু অভিজ্ঞতা দরকার হয়। আর আমার সেই অভিজ্ঞতা আছে।তাই আর বসে না থেকে লিখে ফেললাম একটা গল্প।
Post a Comment